শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির সংগ্রাম, ছোট কাগজ আন্দোলন, সমকাল, সময়কাল নির্মাণ-বিনির্মাণ,, এমন সব অনুষঙ্গের অন্ত নেই।
চিন্তনসৃজন ক্যানভাসে চাই, কমিটমেন্ট, সজাগ, সচল গতির পরিক্রমা। মোটাতাজা বিজ্ঞাপন নির্ভর লিটল ম্যাগাজিন তোড়জোড়ে বেরোয়, সার-সারাৎসার টের পাওয়া যায় না, দেখা যায় রঙিন, সেন্স অফ বেসিক প্রাকটিসের বারোটা বেজেছে।
আত্মোপলব্ধির উন্মোচন, সময়কালের পোস্টমর্টেম, তৃতীয় চোখের সমাজবীক্ষণ তথা লিটলম্যাগীয় মূল্যবোধের সবেগস্ফুরণ যেনো থেমে যাচ্ছে। লিটলম্যাগীয় কণ্ঠস্বর এক কথায় অনুপস্থিত।
শুধুই কী শিল্পের জন্য শিল্প। জীবন, জনপোলক্ষের দায় কি? তা বিবেচনা জরুরী। আপসকামী আবহে পতিত যেনো আমাদের সত্তা। রাজনীতি, সংস্কৃতি, বিদ্যাবুদ্ধি-প্রজ্ঞাচর্চা অস্তিত্ব সংকটে, গন্তব্য জানা নেই এমন এক অবস্থা। রাজনৈতিক অবনয়নে দূষিত হয়েছে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। মেরুদণ্ডহীন স্তাবক তৈরি হয়েছে গণহারে। প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পরও দুর্গতিচিত্র কাম্য নয়। অর্থ-বিত্ত-পদলোভীদেরই বাজার গরম।
নৈতিকতা, সাম্য, সৌন্দর্যের মাঠ তৈরি হবার তো কথা। সবকিছুতেই বেসামাল, গতিহীনতা। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-দর্শন-বিজ্ঞান ভাবনায় মুক্ত-উদারতার পরিবেশ সংস্কার আবশ্যক।
আমাদের প্রকাশনা শিল্প কালারফুল হয়েছে, কিন্তু সৃজনশীল সূক্ষ্ম-গভীর মননশীলতায় পিছিয়ে আছে। ঢাউস প্রোডাকশনগুলোকে বোঝানো হচ্ছে শিল্পের উত্তরণ। কেননা, সৃজনমাত্র শিল্প নয়, নয় উপভোগ্য, সুপাঠ্য। ক্ষেত্র বিশেষ বজ্যের স্তূপ জমা হচ্ছে, টিলা বাড়ছে কেবল: এসবে প্রাত্যহিক উন্নতি নেই তেমনটি। সত্যিই আমাদের স্বগতোক্তিতে বেরিয়ে আসছে আমরা পারছি না, যা করার।
ভাঁজপত্রেও আগুন জ্বলে, জ্বলে লিফলেটে, ছোটো কাগজ, পাতায়। কিন্তু আন্ধার সময়কে চিনে নিতে না পারলে তো আর আলো জ্বালাবার পথ সহজ নয়।
ইতিবাচক চিন্তার স্বরণে নিত্য অনুশীলন জরুরি। সময় অতিক্রম করতে হয় সময়ের সাথে, স্রোতের সাথে। পিছিয়ে পরলে শাসন করে রাজনীতি, আর এগিয়ে থাকলে সংস্কৃতি পথ দেখায় উন্নত জীবন-সভ্যতার। এমনি করে রাজনীতি এগিয়ে যায় সাংস্কৃতিক পরিচর্যায়।
নির্ভেজাল নতুন বীজের অঙ্কুরোদগম হচ্ছে, হবে, এদের বিশুদ্ধ পরিচর্যায় বিকশিত হবার সুযোগ দিতে হবে। হাতেগোনা শুদ্ধদের সাথে অঙ্গীকারবদ্ধ সৃজনশীল পঁচারাও শুদ্ধতায় ফিরে আসতে পারে, আসুক, ক্ষতি নেই, ক্ষমা আছে।
শুধু ভোগবাদ নির্ভর সৃজন নয়, শিল্প-সংস্কৃতির চর্চায় কালের যথার্থ প্রতিনিধিত্ব এবং মানবিক দায়বদ্ধতা অনিবার্য।
সৃজন-মুদ্রণের ছোট বড় মাঝারি বিশাল কাগজ হোক, সমস্যা নেই। কিন্তু তাতে জীবনসংস্কৃতির নৈতিক চেতনার আগুন জ্বলুক আগে-চেতনবেগে…।